পেট্রল স্টেসনের উপর বিশাল কনক্রিটের উড়োজাহাজ এই ধ্যান ধারণা , বাংলাদেশের জন্য নতুন হতে পারে, কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে এমন চমকদার ভাবনা নতুন নয় | হেমায়েতপুরের ওই ফিলিং স্টেশন দেখে , বেশ কয়েকবার আমার মনে হয়েছে , কোনো এক ইংরেজি চলচিত্রে , এমনি এক পেট্রল পাম্প আগুনে পুড়িয়ে ফেলার দৃশ্য আছে| আমার মন্থর মেমরি ওই ফিল্মের নাম মনে করতে পারেনি| তবে সার্চ ইঞ্জিনে ঠিকই খুঁজে বের করেছি, এমনি একই রকম আরো একটা পেট্রল স্টেশনের সন্ধান পাই, আমেরিকার অরেগন অঙ্গরাজ্যের মিলওয়াকিতে:
বোম্বার গ্যাস স্টেশন
মিলওয়াকিতে এই পাম্প স্হাপিত হয় ১৯৪৭ সালে, সেই সময় থেকে, এই স্থানটা জনপ্রিয় ল্যান্ডমার্কের মর্যাদা লাভ করেছে| পাম্পের মালিক আর্থার উইলিয়াম লাসি(Lacey)কে, আরকানসাস থেকে এই B-17 বোমারু বিমানটিকে মিলওয়াকিতে আনতে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে, কোনো ফিল্ম মেকার চাইলে এই গল্প দিয়ে অনায়াসে ছায়াছবি বানাতে পারবেন|
গল্পের শুরু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অল্প পরে| এই উদ্ভট গ্যাস স্টেশনের আইডিয়া নিয়ে আর্থার আরকানসাসে পৌঁছান বোমারু বিমান কেনার জন্য, উদ্দেশ্য বোমারু বিমানকে আইকন হিসেবে ব্যবহার করে, গ্যাস(এই খানে পড়তে হবে- পেট্রল) ব্যবসা করবেন| আরকানসাসে তখন সদ্য শেষ হওয়া যুদ্ধের বেচে যাওয়া যন্ত্রের খুচরা বাজার বসানো হয়েছে| এই বিমানটি কিনতে তার ১৫০০০ ডলার গুনতে হয়েছে| বিমান কেনার সময় ঠিক হয়নি ঠিক কোন বিমানটা তিনি নিয়ে যাবেন, মজার ব্যপার এই কথা সেল ইন চার্জকে জিজ্ঞেস করায়, তিনি যে কোনো একটা বিমান উড়িয়ে নেওয়ার অনুমতি পান, কারণ মাইলের পর মাইল পরিত্যক্ত বিমান পরে ছিল সেখানে|
আর্থার বিমান বি-১৭ বিমান কে বাছাই করার পর দেখলেন , এটা একটা ৪ ইঞ্জিনের বিমান, যা চালানোর অভিজ্ঞতা তার ছিলনা, তাছাড়া এই বিমান একা তার পক্ষে অবতরণ করা কষ্ট সাধ্য ছিল|অতএব, একজন কো-পাইলট দরকার ছিল , কিন্তু তখন কাউকে পাওয়া যায়নি| আবার বি - ১৭ অবতরণের জন্য সব সময় এই বিমানে দুই জন পাইলট থাকা চাই, অগ্যতা আর্থার কো-পাইলটের জায়গায় একটা ডামি বসিয়ে পাম স্প্রিংএর উদ্দ্যেশে, পরে মুখ ঘুরিয়ে ওরেগনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে ছিলেন| তুষার ঝড়ের মধ্যে দিয়ে অরেগন আসার পর, হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ কখনই এই বিমান কে রাস্তায় নামানোর অনুমতি দেয়নি| অবশেষে মাঝরাতে মূল রাস্তা ধরে বর্তমান জায়গায় এই বিমানটিকে আর্থার নিয়ে আসেন, এর জন্য তাকে ১০ ডলার জরিমানাও দিতে হয়েছে.
বর্তমানে, পেট্রল পাম্পটা এর সচল নেই, 'লেডী লাসি'(বিমানটার ডাকনাম, আর্থারের বৃটিশ স্ত্রীর নাম অনুসারে) এখনো পাশের রেস্টুরেন্টের বিজ্ঞাপন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে.আর্থার ২০০১ সালে গত হয়েছেন, কিন্তু আর্থারের কিংবদন্তীর সাক্ষী বোমারু বিমানটা এখনো সবাইকে তার কথা মনে করিয়ে দেয়|
বর্তমানে, পেট্রল পাম্পটা এর সচল নেই, 'লেডী লাসি'(বিমানটার ডাকনাম, আর্থারের বৃটিশ স্ত্রীর নাম অনুসারে) এখনো পাশের রেস্টুরেন্টের বিজ্ঞাপন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে.আর্থার ২০০১ সালে গত হয়েছেন, কিন্তু আর্থারের কিংবদন্তীর সাক্ষী বোমারু বিমানটা এখনো সবাইকে তার কথা মনে করিয়ে দেয়|
...................
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন