সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

Basic Ali : Graphic Novel : Experience

বেসিক আলী’র ভৌতিক অভিযান পড়ে ফেললাম। এটা বেসিক আলী কে নিয়ে প্রথম ‘ফুলস্কেপ’ কাহিনী, তাই বেসিক আলীর অন্যান্য ডাইজেস্ট-এর চেয়ে এই বইয়ের প্রতি আলাদা আগ্রহ ছিল। শাহরিয়ার খান বেসিক আলী’র অগনিত পাঠককে খুশি করার যথাসাধ্য চেষ্ঠা করেছেন। এই কমিক্স নিয়ে গোছানো রিভিউ লেখার দুঃসাহস এই মুহূর্তে করছি না, তবে বেসিক আলী পড়ার অভিজ্ঞতা- আমার মতই বেসিক আলীর ভক্তদের সাথে শেয়ার করছিঃ

 


 

১. শাহরিয়ার খান, ‘বেসিক আলী’কে পরিবার, বন্ধুত্ব ও অফিস কেন্দ্রিক গতানুগতিক চরিত্র থেকে বের করে ঝুঁকি নেয়ার মত সিরিয়াস চরিত্র দিয়েছেন। উপন্যাসের বেসিক আলী, প্রথম আলোর ডেইলী কমিক স্ট্রিপের চিরচেনা বেসিক আলীর চেয়ে বেশী রোমান্টিক, মারকুটে একশন হিরো, রিস্ক টেকার, এডভেঞ্চারপ্রেমী। তবে বেসিকের ফাতরা দুষ্টুমী বাদ যায়নি। প্রথমবারের মত বেসিক আলীকে একদল সশস্ত্র ভিলেনের মোকাবিলা করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে পাঠকরা একজন নতুন বেসিক আলীর সাথে পরিচিত হবেন।


২. উপন্যাসের মূল চরিত্রে বেসিক আর রিয়ার ভূমিকা বেশী, হিল্লোল অনেকটা পার্শ্ব চরিত্রে ছিলো। হিল্লোলকে যারা কখনো গার্লফেন্ডের সাথে দেখেননি, তারা এবার তা দেখতে পারবেন। এছাড়া মলি, তালিব, নেচার, ম্যাজিক, দখিনা থানার ইন্সপেক্টর ‘নরজুল’ ভাই, বাঙ্গু ব্যাংকের চেয়ারম্যান, দেলোয়ার ভাইদের আনাগোনা ছিল। রেগুলার কমিক স্ট্রিপের কয়েকটি আলোচিত চরিত্র উপন্যাসে আসেনি। বোধ করি, গল্পের প্রয়োজনে ঐ রেগুলার চরিত্রদের শাহরিয়ার খান উপন্যাসে আনেননি। 

৩. ছোট্ট স্পয়লারঃ উপন্যাসে শাহরিয়ার খান প্রথম বারের মত বেসিক আলীকে তার ফিকশানাল জায়গা-(দখিনা, বাদেকুশা) থেকে বের করে এনেছেন। বেসিক আলীর এই এডভেঞ্চারের বড় অংশ শ্রীমঙ্গলে ‘চিত্রায়িত’ হয়েছে। 





৪. পুরো কাহিনীটা কমেডির পাশাপাশি, এডভেঞ্চার, একশন, ক্ষেত্র বিশেষে থ্রিলারের প্যাকেজ। গল্পের প্যাটার্ন দেখে মনে হয়েছে এই কাহিনীকে অনায়াষে এক ঘন্টার একটি টেলিফিল্ম বা চলচিত্রের রূপান্তর করা যাবে। শাহরিয়ার খান হয়তো এমনই এক চিত্রনাট্যকে কমিক্স আকারে উপস্থাপন করেছেন। তার উপস্থাপনা অসাধারণ হয়েছে।


৫. শাহরিয়ার খান একবার কমিক্সের ‘ইংকিং’-কে বেশ ‘পেইনফুল জব’ বলেছিলেন। এই ‘পেইনফুল জব’ তিনি অনেক ধৈর্য্য এবং নিষ্ঠার সাথে করেছেন। যার প্রতিফলন পাঠকরা প্রতিনিয়ত ফেসবুকের পাতার পাচ্ছেন, এবার পাবেন বেসিক আলীর প্রিন্টেড ভার্সন-এ। প্রতিদিন পত্রিকা পড়ার আগে ফেসবুকে লগ-ইন করি বেসিক আলীর রঙ্গীন সংস্করণ পড়ার জন্য। কারণ, প্রথম আলোর সাদাকালো বেসিক আলীর চেয়ে রঙ্গীন বেসিককে আমি বেশী পছন্দ করি। সেই রঙ্গীন বেসিক আলী আরো ঝলমলে রূপ নিয়েছে, প্রিন্টেড ভার্সনে।



সব মিলিয়ে বেসিক আলীকে নিয়ে ‘চিত্রিত’ ৯২ পৃষ্ঠার গ্রাফিক নভেল আমাকে নিরাশ করেনি। Cheers!

শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৬

চিরকুটঃ Safety is a Product


নিজের মনের অগোছালো ভাবনা থেকে লিখছিঃ 
একটা সময় র‍্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়িন বা র‍্যাব এসে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছিল। কালক্রমে র‍্যাব এখন পুলিশের মতই ঝিমিয়ে পড়া নিরাপত্তা বাহিনী হয়ে গেছে, ক্রমাগত ক্ষমতাসীন দলের নিজস্ব মিলিশিয়ায় পরিণত করা হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ আর র‍্যাব এর মত এলিট ফোর্সকে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে এই দুই শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী হয়রাণ। 

তাই তকি, তনুরা মারা পরে অনিরাপত্তা আর অসামাজিকতারর অজুহাতে, এদের হত্যার বিচার ভাল মতে দেয়া হয় না। সাগর-রুনীর হত্যাকারিরা বছরের পর বছর পর্দার আড়ালে থেকে যায়। জুলহাসদের ইসলামি জঙ্গী সংগঠনের ব্যানারে মারা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে মরে যেতে হয় ভোঁতা দাওয়ের কোপ খেয়ে। ব্লগারদের হত্যা করা যেন ডালভাত। এতক্ষণ যাদের খুনের কথা বললাম এরা সবাই সাধারণ মানুষ। 
এবার অসাধারণ মানুষদের কথা বলি। যেমন আমাদের প্রধান্ মন্ত্রি পুত্র সজীব ওয়াজেদ। তিনি বাংলাদেশে থাকেন না, কিন্তু তিনি এগ্রিভড হয়ার আগেই উনার খুনের ষড়যন্ত্রিদের ধরে ফেলা হয়। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হয়না তাকে। বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহান আমাদের প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের মত পলিটিকাল ভি আই পি নন। কিন্তু তার আছে বিত্ত, তিনি নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন তার পারসোনাল আরমার্ড বডি গার্ড দিয়ে। নিরাপত্তাকে সাধারণ মানুষের জন্য আকাংক্ষিত বা দুর্লভ পণ্য বানানো হচ্ছে। সেইদিন আর বেশি দূরে নেই, বাংলাদেশের এলিটরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য পারসোনাল ফোর্স ভাড়া করবেন বা নিজেরাই ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনী পালবেন। নিরাপত্তার নামে এমেরিকা থেকে অস্ত্র আমদানি বাড়িয়ে দেয়া হবে। 

তাই এখন আর বাঘের মত একা একা চলি না। ভেড়ার পালের মত দলবেঁধে চলি। আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা হয়। আমার দেয়া ট্যাক্সের টাকায় চালানো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে নিরাপত্তা আশা করার সময়, মাঝে মাঝে মনে হয়, আমার ট্যাক্সের টাকা গুলি বৃথা যাচ্ছে। কিন্তু আমার যে নিজের গার্ড পোষার মত সামর্থ্য নেই , আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমি 'নিরাপত্তা' নামের পণ্য কিভাবে কিনবো ? 29.04.2016

শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৬

Photo Blog : Nyangabgwe Hill

Photo Blog : Nyangabgwe Hill
Francis Town : Botswana

জিম্ববাবুয়ের রাজধানী হারারে আর বুলাওয়ে শহর দুইটি আমাদের বাংলাদেশীদের কাছে পরিচিত নাম। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল জিম্বাবুয়েতে এলে এই দুইটি শহরে ক্রিকেট ম্যাচ খেলে। বতসোয়ানা থেকে এই দুইটি শহরের সাথে রেল যোগাযোগ আছে। বতসোয়ানা থেকে জিম্বাবুয়েতে ঢোকার জন্য ফ্রান্সিস টাউন হয়ে যেতে হয়। ফ্রান্সিসটাউন, বোতসোয়ানার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং দেশের উত্তর পূর্ব কোণের সবচেয়ে বড় বানিজ্যিক কেন্দ্র এবং যোগাযোগ শহর।
Panoramio
১৮৯৭ সালে, টাটি নদীর তীরে এই শহরের গোড়াপত্তন হয়। তবে টাটি নদী ছাড়াও এই শহরে আরেকটি চোখে ল্যান্ডমার্ক হচ্ছে - ন্যাঙ্গাবগুয়ে পাহাড়(Nyangabgwe Hill)! প্রথম প্রথম এইরকম নাম শুনে আমি নিজেও একটু থতমত খেয়েছিলাম। বতসোয়ানার আঞ্চলিক ভাষা সেতসোয়ানাতে নাম এতো জটিল হয় না, এই পাহাড়ের এমন নাম উচ্চারণ করতে আমাকে প্রথম প্রথম বেশ বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে আমি যে বাংলাদেশী পরিবারের সাথে ফ্রান্সিস টাউনে ছিলাম, সে পরিবারের তিন স্কুল পড়ুয়া বাচ্চারা খুব সহজেই পাহাড়ের এই নামটা বলতো। নামটা আমি এখনো আত্মস্ত করতে পারিনি। 

Nyangabgwe Hill সকালে বেশ চমৎকার দেখায়। সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় ১০৮৩ মিটার উচ্চতায় এর অবস্থান। এই পাহাড়ে উঠার জন্য দুই পাশ থেকে দুইটি পথ আছে। এটাই শহরের একমাত্র উম্মুক্ত পাহাড়, বাকি টিলা গুলি বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ছেয়ে গেছে।  শহরের সবচেয়ে উঁচু স্থান হয়ায়, মোবাইল ফোন কোম্পানি আর সরকারি রেডিও স্টেশনের টাওয়ার এই পাহাড়ের চুড়া দখল করে নিয়েছে। পাহাড়ের দক্ষিণ পাদদেশে সরকারি কর্তাদের জন্য আবাসিক এলাকা করা হয়েছে। বিভিন্ন টাওয়ার আর দক্ষিণের বাড়িঘর পাহাড়ের প্রাকৃতিক ইমেজ হালকা করেছে, তারপরও সকালে বা বিকালে এই পাহাড়ে দল বেঁধে হাঁটার লোকজন কখনো কম হয় না। 

জিম্বাবুয়ে যাওয়ার মেইন রোডের পাশে, শহরের প্রায় মাঝে এই পাহাড়ের অবস্থান। শহরের উত্তর ও দক্ষিণ-প্রায় সব কোণ থেকে এই পাহাড় আমার নজরে পরেছে। তাই আমার কাছে Nyangabgwe Hill এই শহরের আইকন হিসেবে মনে হয়েছে। 
Geotag:  21° 9'7.88"S  27°30'39.96"E | Sight By Walk