কালো কোট ও মিথ্যুক
১.
তোরাব আলী, ঋনালি ব্যাঙ্কের সদ্য নিয়োগ পাওয়া, ঋণ দেওয়ার কেরানি | তোরাব আলীর এটা প্রথম কেরানির চাকুরী | চাকুরী পেয়ে তোরাব আলীর মনে হয়, তার ধর থেকে বিশাল প্রস্তরটি নিচে পরে গেছে | তারপরও মনে মনে তোরাব আলীর প্রায় আক্ষেপ হয়, 'আহারে! আমি যদি কালো কোট অথবা সাদা এপ্রন পরার পেশায় যাইতে পারিতাম , কতইনা বেশি অর্থ উপার্জন করিতাম, সম্মান পাইতাম'|
২.
শ্যামলা-সিধা তোরাব আলীর ক্ষেত্র বিশেষে কয়েকবার হাসপাতালে সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে| ভাগ্যবান তোরাব,ডাক্তারদের কাছে থেকে ভাল ব্যবহার পেয়ে সাদা আলখাল্লাধারীদের প্রতি মন বিগলিত হয়, একই সাথে পেশাগত ক্ষেত্রে সম্মান নিয়ে তার আক্ষেপ কিঞ্চিত বেড়ে যায়| তবে কোর্ট-কাচারিতে কোনো কারণ বশত যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি | এইবার একটা মওকা পাওয়া গেছে,ব্যাঙ্কের একটা কেস অর্থঋণ আদালত হয়ে হাইকোর্ট গড়িয়েছে | তোরাবের জৈষ্ঠ কেরানি ইলিয়াস, তোরাবকে সঙ্গী হিসেবে হাইকোর্টে নিয়া যাবেন | মনে মনে তোরাব ভাবে, 'কতদিন আমি বাসে চড়িয়া, এই সাদা বাড়িটার সামনে দিয়া গমন করিয়াছি, এইবার এই বাড়ির ভেতরে যাইবার মওকা মিলিলো"|
৩.
অবশেষে কালো কোটধারীদের পেশাগত সম্মানের বিষয়টি ভাবতে ভাবতে তোরাব ও তার জৈষ্ঠ কেরানি ইলিয়াস হাইকোর্টে পৌছালেন| হাইকোর্টের বাগান, বাধানো পথ দেখে তোরাব পুলকিত বোধ করলো|সে মামলার শুনানি অতি মনোযোগের সাথে শুনে, কালো কোট পরিহিত লোকটির বাক্যবানের চতুরতায় তোরাব মুগ্ধ হলো| মনে মনে তোরাব ভাবে,'আহা! সত্য গোপন করাও একটি শিল্প'|
৪.
শুনানী শেষ, তোরাব আর ইলিয়াস বাইরে দাড়িয়ে, ইলিয়াস তার এক পরিচিতো লোকের সাথে কথা বলছেন| তোরাব অতীব আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করে কালো আল্খাল্লাধারীদের মুখমন্ডলও কৃষ্ণকায়, একজনের চেয়ে আরেকজনের বেশি| তোরাব উজ্জল বর্ণের উকিলদের মুখমন্ডলেও কালো রঙের আভা খুঁজে পায়|তোরাব নিজেকে মনে মনে বুঝ দেয়, 'নাহ! কৃষ্ণ বর্ণের ব্যাপারটি কাকতাল হবে, কী ভাবিতে কী ভাবিতেছি|আমি নিজেও আহামরি শ্যামলা নই|'ইলিয়াস তোরাবের কাছে ফিরে আসলেন| তোরাব তার এই অস্বাভাবিক পর্যবেক্ষণ ইলিয়াসের সাথে শেয়ার করলেন |
৩.
অবশেষে কালো কোটধারীদের পেশাগত সম্মানের বিষয়টি ভাবতে ভাবতে তোরাব ও তার জৈষ্ঠ কেরানি ইলিয়াস হাইকোর্টে পৌছালেন| হাইকোর্টের বাগান, বাধানো পথ দেখে তোরাব পুলকিত বোধ করলো|সে মামলার শুনানি অতি মনোযোগের সাথে শুনে, কালো কোট পরিহিত লোকটির বাক্যবানের চতুরতায় তোরাব মুগ্ধ হলো| মনে মনে তোরাব ভাবে,'আহা! সত্য গোপন করাও একটি শিল্প'|
Political lawyer |
৪.
শুনানী শেষ, তোরাব আর ইলিয়াস বাইরে দাড়িয়ে, ইলিয়াস তার এক পরিচিতো লোকের সাথে কথা বলছেন| তোরাব অতীব আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করে কালো আল্খাল্লাধারীদের মুখমন্ডলও কৃষ্ণকায়, একজনের চেয়ে আরেকজনের বেশি| তোরাব উজ্জল বর্ণের উকিলদের মুখমন্ডলেও কালো রঙের আভা খুঁজে পায়|তোরাব নিজেকে মনে মনে বুঝ দেয়, 'নাহ! কৃষ্ণ বর্ণের ব্যাপারটি কাকতাল হবে, কী ভাবিতে কী ভাবিতেছি|আমি নিজেও আহামরি শ্যামলা নই|'ইলিয়াস তোরাবের কাছে ফিরে আসলেন| তোরাব তার এই অস্বাভাবিক পর্যবেক্ষণ ইলিয়াসের সাথে শেয়ার করলেন |
৫.
তোরাব: স্যার, একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন ?
ইলিয়াস: কী ব্যাপার ?
তোরাব: আজ সারাদিন যত উকিল দেখলাম, সবারই চেহারা একজনের চেয়ে আরেক জন বেশি কালো| কয়েক জন ফর্সা উকিল দেখলাম, যাদের চেহারাও দেখে মনে হইলো কালো ছাপ পরে আছে|
ইলিয়াস তোরাবের এই কথা শুনে হো হো হেসে উঠলেন| কৌতুকের সুরে বললেন, "মিথ্যা কথা বলতে বলতে চেহারা কালো হয়ে গেছে"|
৬.
তোরাব নিজের এই পর্যবেক্ষণের বিপক্ষে ভালো যুক্তি আশা করছিলেন| কিন্তু উকিলদের দলাদলি, আর ওকালতির চেয়ে বেশি রাজনীতি ও আদর্শহীন ব্যবহারের খবর তোরাবের মনে ধাক্কা দিয়ে যায়| ক্ষনিকের জন্য হলেও ইলিয়াস সাহেবের কথা, সত্য বলে মনে হয় |
------
ছবি ঋণ: banglanews24.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন